মহানায়ক উত্তম কুমারের জীবন কাহিনী Mahanayak Uttam Kumar Biography in Bengali 2023

Table of Contents

মহানায়ক উত্তম কুমারের জীবন কাহিনী Mahanayak Uttam Kumar Biography in Bengali

উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar) ভারতীয় চলচ্চিত্রের বাংলা সিনেমার একজন কিংবদন্তী এবং সর্বশ্রেষ্ঠ মহানায়ক রূপে পূজিত। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলার প্রথম সুপারস্টার হলেন উত্তম কুমার(Mahanayak Uttam Kumar)। শুরুতে অরুণ কুমার নামে কিছু বানিজ্যিক ভাবে অসফল সিনেমা দিয়ে নিজের কেরিয়ার শুরু করলেও, কিছু সময় পর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি হয়ে ওঠেন বাংলার সব থেকে জনপ্রিয় নায়ক। তাঁর সময়ে তাঁকে ম্যাটিনি আইডল বলা হত। সেই সময়ের যুবকেরা উত্তম কুমারের মতো হতে চাইত । সমস্ত মহিলা দল উত্তম কুমারের নামে মোহচ্ছন্ন ছিল।

আজকে আমরা বাঙালি ও বাংলা সিনেমা জগতের সর্বকালের সেরা নায়ক উত্তম কুমারের জীবনী সম্পর্কে দু-চারটে কথা আপনাদের সম্মুখে তুলে ধরবো। অভিনয় জগতে উত্তম কুমার এমন একজন কৃতিত্বের অধিকারী ছিলেন যে, আজও তিনি দর্শক হৃদয়ে তার নিজস্ব জায়গায় স্বমহিমায় রয়েছেন।

স্বাধীনতার পরে সবে বাংলা চলচিত্র একটু একটু করে সাজতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই সাদাকালো পর্দায় অভিনয়ের জাদুকাঠির পরশে বাংলা সিনেমার রঙিন উপন্যাসকে আলাদা মাত্রা দিয়ে সঠিক তালমাত্রায় পৌঁছে দেয় উত্তম কুমার।

সব মিলিয়ে ২৫০এর বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন উত্তম কুমার(Mahanayak Uttam Kumar)। বিভিন্ন সময়ে নানা বিধ চরিত্রে নিজেকে সাজিয়ে তুলেছেন উত্তম কুমার- কখনো ভিখারি, আবার কখনো রাজা।

তবে কোথাও যেন বাঙালির মনে উত্তমের সেলুলয়েড জীবনের কাহিনী আজও ধরা আছে । দেশ কালের বাইরে বহু নায়ক বহু বার জন্ম নিয়েছে ঠিকই, কিন্তু মহানায়ক একজনই রয়ে গেছেন, তিনি হলেন উত্তম কুমার।

অভিনয়ের পাশাপাশি উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)সাঁতার কাটতেন, ফুটবল খেলতে ভালোবাসতেন, মল্লযুদ্ধের আখড়ায় ননী ঘোষের কাছে তিনি কুস্তির তালিম নিয়েছিলেন ।

উত্তম কুমার ছিলেন একজন স্বাস্থবান পুরুষ, তাই অভিনয়ের পাশাপাশি তার রূপ সৌন্দর্যের জাদুও সেকেলের তরুণীদের মনে আঁচড় কাটত, বলা বাহুল্য সেকালের তরুণ প্রজন্ম উত্তম নামেই মোহমুগ্ধ ছিলেন।

মহানায়ক উত্তম(Mahanayak Uttam Kumar) কুমারের জন্ম

এক শুভলগ্নে ৩রা সেপ্টেম্বর ১৯২৬ সালে কলকাতার আহিরীটোলায় মামারবাড়িতে জন্মগ্রহণ হয় উত্তম কুমারের। তাঁর পিতৃনিবাস হল কলকাতার ভবানীপুরে। উত্তম কুমারের আসল নাম অরুণ কুমার চ্যাটার্জী।

মহানায়ক উত্তম কুমারের পরিবার

উত্তম কুমারের (Mahanayak Uttam Kumar)বাবা শ্রী সাতকড়ি চ্যাটার্জী কলকাতার মেট্রো সিনেমা হলে মেশিন অপারেটরের কাজ করতেন এবং তাঁর সাথে সময় পেলে মাঝে মধ্যে নাট্য চর্চায় মন দিতেন।

Mahanayak Uttam Kumar

মাতা চপলা দেবী ঘরের গৃহকর্মে একজন সাধারণ মহিলার ন্যায় সংসারের কাজ সামলাতেন । উত্তম কুমারের আরো দুজন ভাই ছিলেন, তাদের নাম বরুন কুমার চ্যাটার্জী এবং তরুণ কুমার চ্যাটার্জী।

১৯৪৩ সালে উত্তম কুমার গৌরী দেবীকে বিবাহ করেন এবং তাদের একটি পুত্র সন্তান হয়। উত্তম কুমারের(Mahanayak Uttam Kumar) পুত্র সন্তানের নাম গৌতম চ্যাটার্জী।

আজকে গৌতম চ্যাটার্জীর পুত্র উত্তম কুমারের নাতি গৌরব চ্যাটার্জীকে বাংলা সিরিয়ালের ছোট পর্দায় অনেক চরিত্রেই দক্ষতার সঙ্গে অভিনয় করতে দেখা যায় ।   

মহানায়ক উত্তম কুমারের জীবনীছক

আসল নামঅরুন কুমার চ্যাটার্জী
সিনেমা জগতে প্রসিদ্ধ নামউত্তম কুমার
জন্ম১৯২৬ সালের ০৩ সেপ্টেম্বর
জন্মস্থানকলকাতার আহিরীটোলার মামার বাড়িতে
বাবার নামসাতকড়ি চ্যাটার্জী
মায়ের নামচপলা দেবী
ভাইবরুন কুমার এবং তরুণ কুমার
শিক্ষাগত যোগ্যতাউচ্চ মাধ্যমিক(গ্রাজুয়েট অসম্পূর্ণ)
চলচিত্র জীবনে পদার্পন করেন১৯৪৮ সালে ‘দৃষ্টিদান’ ছায়াছবি দিয়ে
স্ত্রীগৌরী দেবী(১৯৪৩ সালে বিবাহ করেন)
পুত্রগৌতম চ্যাটার্জী
নাতিগৌরব চ্যাটার্জী
উত্তম কুমারের লেখা বইআমার আমি এবং হারানো দিন গুলো মোর(অসম্পূর্ণ)
প্রেমিকাসুপ্রিয়া দেবী(জীবনের শেষ ১৭ বছর তিনি সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে কাটান)
উত্তম কুমারের মৃত্যু১৯৮০ সালের ২৪শে জুলাই হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান
উত্তম কুমারের জীবনী

মহানায়ক উত্তম কুমারের শিক্ষাজীবন

উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)সাউথ সাবার্বান স্কুল থেকে তাঁর স্কুল জীবনের পঠন পাঠন শুরু করেন। স্কুল শিক্ষা পুরো করে, পরে বাণিজ্য বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করার জন্যে তিনি গোয়েঙ্কা কলেজে ভর্তি হন। সেখানে বিজনেস এবং কমার্সের শাখায় পড়াশোনা করেন। কিন্তু পারিবারিক দুরবস্থার জন্যে তাঁর স্নাতক স্তরের পড়াশোনা অসম্পূর্ণ থেকে যায় । তিনি স্নাতক পাস করে উঠতে পারেন নি।

মহানায়ক উত্তম কুমারের কর্মজীবন

উত্তম কুমারের চাকুরী জীবন

উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)স্নাতক অসম্পূর্ণ রেখেই কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টে কেরানী পদে চাকরী নিয়ে কাজে যোগ দেন । চাকরীর পাশাপাশি সুহৃদ সমাজ নাট্যগোষ্ঠীতে তিনি অভিনয় করতেন। এটি তাদের পারিবারিক নাট্যগ্রুপ হিসেবে খ্যাত।

উত্তম কুমারের অভিনয় হাতেখড়ি

উত্তমের(Mahanayak Uttam Kumar) অভিনয় প্রেম ও সিনেমায় অভিনয়ের পিছনে কিছু কারণ অবশ্য খুঁজে পাওয়া যায় । উত্তম কুমারের (Mahanayak Uttam Kumar)বাবা সাতকড়ি চ্যাটার্জী ছিলেন নাট্যপ্রেমী মানুষ, সেই সূত্র ধরেই হয়ত উত্তমের রক্তে অভিনয়ের রক্তবীজ পুঞ্জীভূত হয়েছিল।

উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)সেকালীন কলকাতার লুনার ক্লাবের সদস্য ছিলেন। সেই ক্লাবেই তিনি ‘মুকুট’ নামক রবীন্দ্র নাটকে প্রথম মঞ্চাভিনয় দিয়ে অভিনয়ে হাতেখড়ি দেন। নিতীন বোস পরিচালিত ‘মায়াডোর’ নাটকে তিনি সকলের নজর আকর্ষণ করেন।

উত্তম কুমারের চলচ্চিত্র জীবন

নীতিন বোসের পরিচালনায় ‘দৃষ্টিদান’ ছবিতে ১৯৪৮ সালে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন। এই সময় তিনি নিজের আসল নাম অরুণ কুমার চ্যাটার্জী লিখতেন। একের পর এক উত্তম অভিনীত ছায়াছবি গুলো ফ্লপ হয়ে যাওয়ায় উত্তম কুমার মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিলেন ।

Mahanayak Uttam Kumar

তিনি দর্শকদের হৃদয়ে সেরকম জায়গা করে উঠতে পারেন নি। তিনি সিনেমা ছেড়ে দেবেন ভাবছিলেন । সেই সময় অবশ্য উত্তম কুমারের প্রেমিকা সুপ্রিয়া দেবী উত্তম কুমারের পাশে ছিলেন।

সুপ্রিয়া দেবীর অনুপ্রেরণায় উত্তম কুমার(Mahanayak Uttam Kumar) আবার নতুন করে সিনেমায় অভিনয় শুরু করলেন । পাশাপাশি, ফ্লপ হিরোর তকমার এক ঘেয়েমি ভাব কাটিয়ে ওঠার জন্যে তিনি জীবনে নানাবিধ পরিবর্তন নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে নিজের নাম পরিবর্তনের সিধান্ত নেন। তিনি ক্রমাগত জীবন সংগ্রামের সাথে নিজের নাম পাল্টে অরুন চ্যাটার্জী, অরুন কুমার চ্যাটার্জী, আবার কখনো উত্তম চ্যাটার্জী তো কখনো আবার উত্তম কুমার নাম রাখেন।

শেষমেস উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)নাম দিয়েই তিনি তার মাথায় লাগা ফ্লপ নায়কের কলঙ্কের দাগ মিটিয়ে নিজের নামের সাথে বাংলা সিনেমার উত্তম নাম দিয়েই প্রকৃত উত্তম নায়ক হয়ে ওঠেন।

সেই সময় সেকালের সেরা এমপি স্টুডিওর সাথে তিনি তিন বছরের জন্যে চুক্তি আবদ্ধ হন । এমপি স্টুডিওর দৌলতে তিনি ‘বসু পরিবার’ নামে একটি ছায়াছবিতে অভিনয় করলেন। ছবিটি দর্শকদের আসর জোগাল। উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)ভাঙা মনে সাহস ফিরে পেলেন।

সেই সময় ১৯৫৩ সালে নির্মল দে’র পরিচালনায় ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবিতে তিনি অভিনয় করেন। এই ছবিতে উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন না, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, জহর রায় প্রমুখ অভিনেতারাই ছিলেন এই ছবির প্রধান আকর্ষণ।


এই ছবি সেই সময় ভীষণ জনপ্রিয় হয় এবং সাধারণ দর্শক উত্তম কুমারকে(Mahanayak Uttam Kumar) পছন্দ করা শুরু করেন। উল্লেখ্য, এই ছবি দিয়েই প্রথম উত্তম কুমার এবং সুচিত্রা সেনের জুটির জয়যাত্রা শুরু। পরবর্তীকালে এই জুটি বাংলা ছবির জগতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল।


এই ছবির পর উত্তম কুমারকে আর ফিরে তাকাতে হয় নি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি মুখ্য ভূমিকায় সাফল্যের সাথে অভিনয় করে গেছেন।

উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)সর্বকালের সেরা চিত্রপ্রযোজক সত্যজিৎ রায় প্রযোজিত, দুটি বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছেন। সত্যজিৎ রায় প্রযোজিত উত্তম কুমার অভিনীত সিনেমা দুটি হল- ‘চিড়িয়াখানা’ ও ‘এন্টোনি ফিরিঙ্গি’ ।  

একে একে সুপার হিট বাংলা ছবি দিয়ে বাংলার তরুণীদের মনে স্বপ্নের রাজপুত্র হয়ে ওঠে উত্তম কুমার। বাংলা ছবিতে জনপ্রিয়তার নিরিখে বাংলা সিনেমার ম্যাটিনি আইডলের তকমা পায় উত্তম কুমার।

তখনকার দিনের তরুণীরা যেমন উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)নাম শুনেই মোহাচ্ছন্ন হত, ঠিক তেমনি আবার তরুণরা, উত্তম কুমারকে দেখে উত্তম কুমারের স্টাইলে হেয়ার স্টাইল,দাড়ি ও গোফ রাখত।

উত্তম কুমারের হিন্দি সিনেমা

বাংলা সিনেমার বাইরে উত্তম কুমারকে (Mahanayak Uttam Kumar)বেশ কয়েকটি হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করতে দেখতে পাওয়া যায়। উত্তম কুমার বলিউডে বৈজয়ন্তী বালার সঙ্গে ‘ছোটি সি মুলাকাত’, এছাড়া আনন্দ আশ্রম, অমানুষ, কিতাব, দুরিয়া ইত্যাদি হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করেন।

কিন্ত এই সমস্ত সিনেমা গুলো মুম্বাইয়ে হিন্দি সিনেমার দর্শকদের মনে সেরকম সাড়া ফেলতে পারে নি । তাই তিনি (Mahanayak Uttam Kumar) আবার বাংলা সিনেমার জগতে টলিউডে ফিরে আসেন।

মহানায়ক উত্তম কুমারের চলচ্চিত্র জুটি

মহানায়ক উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)সুচিত্রা সেন, সুপ্রিয়া চৌধুরী, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের সাথে প্রধানত অভিনয় করেছেন । এ ছাড়াও শর্মিলা ঠাকুর, মাধবী মুখার্জী, তনুজা, অঞ্জনা ভৌমিকের সাথে বেশ কয়েকটি ছায়াছবিতে অভিনয় করেছেন। উত্তম কুমারের চলচ্চিত্র জুটি বলতে গেলে, যাদের বোঝায়ঃ

Mahanayak Uttam Kumar

উত্তম কুমার – সুচিত্রা সেন জুটি

সুচিত্রা সেন উত্তম কুমার- এই জুটি বাংলা সিনেমার অমর জুটি নামে খ্যাত । ১৯৫৩ সালে উত্তম কুমার সুচিত্রা সেনের সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবিতে অভিনয় করলেন। সিনেমাটি মুক্তি পেতেই প্রেক্ষাগৃহে ব্লকব্লাস্টার হয়ে যায়। এক টানা ৬৫ সপ্তাহ ধরে সিনেমা হলে দর্শকদের মন যোগায় উত্তম সুচিত্রার ‘সাড়ে চুয়াত্তর’।

এরপর উত্তম কুমারকে (Mahanayak Uttam Kumar)আর পিছু ফিরে তাকাতে হয় না । উত্তম ও সুচিত্রা জুটি একের পর এক সুপারহিট সিনেমা দিয়ে দর্শকদের মন জোগাতে থাকে। তারা দুজন এক সাথে প্রায় ৩০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন এবং সবক’টি ছবি চুড়ান্ত সাফল্যলাভ করেছে।

উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেন অভিনীত সিনেমা গুলো হলো হারানো সুর, অগ্নী পরীক্ষা, প্রিয় বান্ধবী, শাপ মোচন, ইন্দ্রাণী, সপ্তপদী ইত্যাদি । এই জুটি প্রায় কুড়ি বছর ধরে সেরার শিরোপা ধরে রেখেছিল।

উত্তম কুমার – সুপ্রিয়া চৌধুরী জুটি

সুচিত্রা সেন ছাড়াও উত্তম কুমারের সাথে যে নায়িকার জুটি প্রায় সমানে সমানে আলোচিত তিনি হলেন সুপ্রিয়া দেবী। উত্তম ও সুপ্রিয়া দেবীর বড় পর্দায় তাদের পথচলা শুরু হয় ‘সোনার হরিণ’ ছায়াছবি দিয়ে । এরপর একেএকে উত্তম ও সুপ্রিয়া দেবীর জুটি সময়ের সাথে সাথে বহুবিধ সিনেমা উপহার দিয়ে দর্শকদের মন জুগিয়েছেন ।

অভিনয় জগতের বাইরে সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে উত্তম কুমারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তিনি জীবন দশায় শেষের ১৭টা বছর স্ত্রী গৌরী দেবীকে ত্যাগ করে সুপ্রিয়া দেবীর সাথেই কাটিয়ে ছিলেন।

একই ভাবে সুপ্রিয়া দেবীও উত্তমের প্রেমে নিজের স্বামীকে পাকাপাকি ভাবে ছেড়ে দিয়ে, উত্তম কুমারকে নিজের সেবা যত্ন দিয়ে নিজের প্রাণের দোসর হিসাবেই ভালোবাসার খোরাক জুগিয়েছিলেন।

উত্তম কুমার ও সুপ্রিয়া দেবী অভিনীত সেরা সিনেমা গুলো হল- সোনার হরিণ, সন্যাসী রাজা, বনপলাসীর পদাবলী, বাঘবন্দীর খেলা, উত্তরায়ণ, কাল তুমি আলেয়া, ইত্যাদি।

উত্তম কুমার – সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় জুটি

উত্তম সুচিত্রা ও উত্তম সুপ্রিয়া জুটি ছাড়াও আর একটি বেশ জনপ্রিয় জুটি হল উত্তম সাবিত্রী জুটি। উত্তম কুমার ও সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়কে বেশ কয়েকটি ছায়াছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করতে দেখা গেছে।

উত্তম কুমার অবশ্য সাবিত্রী দেবীকে একজন প্রতিভাশালী অভিনেত্রী বলে মনে করতেন। উত্তম কুমার ও সাবিত্রী দেবীর কতগুলো উল্লেখযোগ্য সিনেমা হল- হাত বাড়ালেই বন্ধু, মৌচাক, ধন্যি মেয়ে, দুই ভাই, নিশিপদ্ম, মোমের আলো ইত্যাদি।

তবে উত্তম কুমার ও সাবিত্রী দেবী অভিনীত হাস্যকৌতুক সংলাপ দ্বারা নির্মিত বাংলা সিনেমা ‘মৌচাক’ ও ‘ধন্যি মেয়ে’ আজও দর্শকদের কাছে সমান আদরের ও জনপ্রিয় ।

উত্তম কুমারের অভিনয় ভিন্ন অন্য ক্ষেত্র

Mahanayak Uttam Kumar

উত্তম কুমারের চিত্র প্রযোজনা

মহানায়ক উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)তার অভিনয় জীবনের বাইরে চিত্র প্রযোজনার কাজও করেছেন সফল ভাবে ।

‘বনপলাশীর পদাবলী’ এবং ‘শুধু একটি বছর’ ছায়াছবিতে তিনি চিত্র প্রযোজনার কাজ করেন ।

উত্তম কুমারের সঙ্গীত পরিচালনা 

উত্তম কুমারকে (Mahanayak Uttam Kumar) সংগীত পরিচালনার কাজেও আমরা দেখতে পেয়েছি ।

‘কাল তুমি আলেয়া’ ছবিতে উত্তম কুমার নিজে সংগীত পরিচালনার কাজ করেছিলেন। এই ছায়াছবিতে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও লতা মঙ্গেসকরকে একসঙ্গে যৌথ কণ্ঠে গান গাইতে দেখা যায় ।

উত্তম কুমারের সাহিত্য চর্চা 

১৯৮০এর দশকে উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)আত্মজীবনী মূলক ‘আমার আমি’ নামে একটি বই লেখেন । বইটি অবশ্য প্রকাশ পায় । কিন্তু উত্তম কুমারের আরও একটি আত্মজীবনী মূলক বই ‘হারানো দিনগুলি মোর’ বইটি তিনি সম্পূর্ণ করে যেতে পারেননি । তার আগেই উত্তম কুমার হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

পরে উত্তম কুমারের আত্মজীবনী (Mahanayak Uttam Kumar)মূলক ‘অসম্পূর্ন হারানো দিনগুলি মোর’ বইটি ৩৭তম কলকাতা বইমেলায় প্রকাশিত হয়।

উত্তম কুমারের রেডিওতে মহালয়া পাঠ 

বাঙালির মনে জনপ্রিয়তা ও খ্যাতির শিখরে থাকা উত্তম কুমারকে (Mahanayak Uttam Kumar)একবার অল ইন্ডিয়া রেডিওর পক্ষ থেকে মহালয়া পাঠ করার জন্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তিনি রেডিওতে মহালয়া পাঠ করেছিলেন কিন্তু মহালয়ার সেরা বাক শিল্পী হিসাবে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের জনপ্রিয়তাকে উত্তম কুমার হার মানাতে পারেনি। দর্শকগণ বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রকেই মহালয়ার সেরা বাচক শিল্পী হিসাবে ভালোবাসা দেয়।

উত্তম কুমারের পুরষ্কার ও সম্মাননা

  1. উত্তম কুমার(Mahanayak Uttam Kumar) ১৯৬৭ সালে ‘চিড়িয়াখানা’ ও ‘এন্টোনি ফিরিঙ্গি’ ছবি দুটির দৌলতে ‘সেরা অভিনেতা’ হিসাবে জাতীয় পুরুস্কার পান। উত্তম কুমারই ছিলেন ‘সেরা অভিনেতা’ জাতীয় পুরুস্কার বিজেতা বাংলা সিনেমার প্রথম নায়ক।
  2. বাংলা ও হিন্দি সহ সব মিলিয়ে উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)প্রায় ২৫০টিরও বেশী ছায়াছবিতে অভিনয় করেছেন। তারজন্যে উত্তম কুমারকে ভারত সরকার ১৯৭৫ সালে ২৫শে নভেম্বর ‘মহানায়ক’ পুরুস্কার দিয়ে সম্মানিত করেন।
  3. কলকাতার টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশনটি উত্তম কুমারকে সম্মান জানিয়ে তাঁর নামে মেট্রো স্টেশনটির নাম রাখা হয় ‘মহানায়ক উত্তম কুমার’ মেট্রো স্টেশন।

মহানায়ক উত্তম কুমারের শেষজীবন

স্ত্রী গৌরী দেবীর সঙ্গে ঝগড়া করে কলকাতার ময়রা স্ট্রিটের সুপ্রিয়া দেবীর বাড়িতে আশ্রয় পেয়েছিলেন উত্তম কুমার (Mahanayak Uttam Kumar)। উত্তম কুমার তাঁর জীবনীতে বলেছিলেন ‘সেদিন বিস্ময় ও মমতা নিয়ে হাসি মুখে দরজা উন্মুক্ত করে আশ্রয় দিয়ে ছিলেন বেণু’ ।

তখন থেকে জীবনের শেষ দিন টানা ১৭ বছর ময়রা স্ট্রীটের বাড়িতেই উত্তম বাবুর ঠিকানা হয়ে উঠেছিল ।

জীবনের শেষের দিকে উত্তম কুমার নানা রকম মামলা সংক্রান্ত ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন । টালিগঞ্জের সিনেমা পাড়াও উত্তম কুমারকে ক্রমশ এড়িয়ে চলছিলো । সময় খারাপ হলে যা হয় আরকি । কিন্ত সামনা সামনি উত্তম কুমারের মুখের সামনে সোজা সাপ্টা জবাব কেউই দিতে পারছিলেন না।

উত্তম কুমার যে ব্যাপারটা বুঝতে পারেনি এমনটা নয়। তবুও উত্তম কুমার সবটা বুঝেও টলিপাড়ায় শুটিং চালাচ্ছিলেন। অপরদিকে তার পত্নী (বান্ধবী) সুপ্রিয়া দেবী হাসপাতালে ভর্তি, সব মিলিয়ে উত্তম কুমার চিন্তা গ্রস্থ ছিলেন।

১৯৮০ সালের ২৩শে ডিসেম্বর প্রাতঃকালে স্নান করে, পূজা সেরে শুটিংয়ের জন্যে উত্তম কুমার বেরোচ্ছিলেন । শুটিংয়ে বেরোনোর আগে সুপ্রিয়া দেবী দরজার সামনে দাঁড়িয়ে উত্তম কুমারকে নিয়মিত বিদায় জানাতেন । উত্তম কুমারের গাড়ির গেট পর্যন্ত গিয়ে রাস্তা পেরোনো পর্যন্ত সুপ্রিয়া দেবী দাঁড়িয়ে থাকতেন। উত্তম কুমার গাড়ির জানালা দিয়ে ফিরে তাকিয়ে দেখলেন কিন্তু আজ তাঁর আদরের বেণুর (সুপ্রিয়া) দেখা পেলেন না।

এমনি একদিন শুটিংয়ে যাওয়ার জন্যে গাড়িতে উঠছিলেন, এমন সময় দেখলেন গাড়িতে থাকা সুদীর্ঘ্য ১৭ বছরের সঙ্গী তার টেপ রেকর্ডারটা যথা স্থানে নেই। উত্তম কুমার তো হতভম্ব ! এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না, জিনিসটা উধাও কি করে হয়ে গেল ?

শেষে অবশ্য তার বুঝতে বাকি রইলনা যে, তার প্রিয় টেপ রেকর্ডারটা চুরি হয়ে গেছে। উত্তম কুমার মনে মনে খুব বিষাদ গ্রস্থ হয়ে পড়লেন। তিনি এতটাই বিমর্ষ হয়ে পড়লেন ঠিক যেন কোনো প্রিয়জন হারানোর ব্যাথা।

সুখ ও দুঃখের টানা ১৭ বছরের সঙ্গী ছিল উত্তম কুমারের টেপ রেকর্ডারটা। এই টেপ রেকর্ডার টার সাথে উত্তম বাবুর নানা স্মৃতি জড়িত ছিল। মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা আগে এভাবেই তার স্মৃতি জড়িত টেপ রেকর্ডারটা ছেড়ে চলে যায়।

মহানায়ক উত্তম কুমারের মৃত্যু

ভারাক্রান্ত মন নিয়ে সেদিন ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ ছবির শুটিং সেটে হাজির হয়েছেন, কিন্ত কেমন যেন অন্যমনস্ক ছিলেন উত্তম কুমার। সারাটা দিন সেরকম ভাবে খাওয়া দাওয়া করেননি । কে’ই বা জানত সেদিনই তার জীবনের শেষ দিন।

সেদিনের শুটিংয়েই হতে চলেছে তার জীবনের শেষ সংলাপ, ‘আমিও দেখে নেবো, আমার নাম গগন সেন….’ এই সংলাপ পুরো বলতে না বলতেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন উত্তম কুমার।

অসুস্থ শরীরে বাড়ি ফিরলেন উত্তম কুমার। বাড়ি ফিরেও বিছানায় বিশ্রাম নেননি উত্তম কুমার। উত্তম কুমারের বন্ধু দেবেশ ঘোষের কথা রেখে সেদিন তার বাড়িতে নেমন্তনে হাজির হন উত্তম কুমার। বন্ধুর সাথে আড্ডা দিতে দিতে কখন মাঝ রাত্রি হয়ে গেছে, ঘড়ির কাঁটার দিকে নজর পড়েনি কারো। অবশেষে রাত করেই মাঝ রাত্রে বাড়ি ফিরলেন উত্তম কুমার।

উত্তম কুমার বাড়ি ফিরে অসুস্থ বোধ করতে লাগলেন, আবার অসুস্থ হলেন উত্তম কুমার। এরপর একেবারে শয্যাশায়ী হয়ে পড়লেন উত্তম কুমার। চিকিৎসার জন্যে উত্তম কুমারকে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।

আইসিইউতে ৪/৫ জন ডাক্তার নিরলস ভাবে চেষ্টা করেও, শেষ পর্যন্ত উত্তম কুমারকে মৃত্যুর হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে পারলেন না। ১৯৮০ সাল ২৪শে জুলাই রাত ৮টা ৩২ মিনিটে দুনিয়ার রঙ্গমঞ্চকে হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে চিরতরে বিদায় জানিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন মহানায়ক উত্তম কুমার। বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর, খুবই অল্প বয়স । তার মৃত্যু বাংলা সিনেমা জগতে নেমে আসে এক গভীর শোকের ছায়া।

উত্তম কুমারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি । ততক্ষনে উত্তমের গিরিশ মুখার্জী রোডের বাড়িতে বিশিষ্ট জনেদের ভিড় জমতে শুরু করেছে। ২৫ তারিখ ভোর বেলায় কলকাতা মহানগর ছাড়িয়ে ভূ-ভারতে উত্তম কুমারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছিল।

তার অন্তিম যাত্রায় সারা কলকাতা পথে বেরিয়ে আসে । ভক্তরা ভিড় করেছিল রাস্তায় রাস্তায় মহানায়ক উত্তম কুমারকে শেষ বারের মতো দেখার জন্যে । বাংলা সিনেমা যতদিন থাকবে উত্তম কুমার মহানায়ক হয়েই রয়ে যাবেন সকল বাঙালীর মনে হৃদয়ে ।

মহানায়ক সম্পর্কে কিছু উক্তি

উত্তম কুমারের এভাবে অকাল মৃত্যুতে সত্যজিৎ রায় বলেন- ‘উত্তমের মত কোনো নায়ক নেই, কেউ হবেও না । আশ্চর্য অভিনয় দক্ষতা উত্তমের । ওর ক্ষমতা আছে দর্শক টেনে রাখার’ ।

শোকাচ্ছন্ন সুচিত্রা সেন বলেন- ‘সত্যি উত্তম হলো গ্রেট । তবুও যেন মনে হয়, ওকে ঠিক মতো আবিষ্কার করা গেলো না’।

উত্তম কুমারের সিনেমার তালিকা

উত্তম কুমারের জীবনী অধ্যয়ন করলে দেখতে পাওয়া যায়, উত্তম কুমার তার জীবন দশায় ২৫০ এর বেশি চলচিত্রে অভিনয় করেছেন। উত্তম কুমার অভিনীত সিনেমার তালিকা আপনাদের সামনে একনজরে তুলে ধরা হল-

সালসিনেমা
১৯৪৮দৃষ্টিদান
১৯৪৯কামনা
১৯৫০মর্যাদা
১৯৫১সহযাত্রী, নষ্টনীড়, ওরে যাত্রী
১৯৫২সঞ্জীবনী, বসু পরিবার, কার পাপে
১৯৫৩সাড়ে চুয়াত্তর, লাখ টাকা, নবীন যাত্রা, বৌ ঠাকুরানীর হাট
১৯৫৪মরণের পরে, ওরা থাকে ওধারে, চাঁপাডাঙ্গার বৌ, অন্নপূর্ণা মন্দির, অগ্নি পরীক্ষা, মনের ময়ূর, গৃহপ্রবেশ, বকুল, মন্ত্র শক্তি, কল্যাণী, ব্রতচারিনী, সদানন্দের মেলা, বিধিলিপি, অনুপমা
১৯৫৫উপহার, কঙ্কাবতীর ঘাট, রাইকমল, দেবতা, সাঁঝের প্রদীপ, হ্রদ, শাপ মোচন
১৯৫৬ত্রিজামা, শ্যামলী, শিল্পী, শঙ্কর নারায়ণ, ব্যাঙ্ক, সাহেব বিবি গোলাম, সাগরিকা, পুত্রবধূ, নবজন্ম, লক্ষ হীরা, একটি রাত, চিরকুমার সভা, রাত ভোর
১৯৫৭সুরের পরশে, পুনর্মিলন, পৃথিবী আমারে চায়, পথে হল দেরী, চন্দ্রনাথ, বড়দিদি,  যাত্রা হল শুরু, তাসের ঘর, অভয়ের বিয়ে, হার জিত, জীবন তৃষ্ণা, হারানো সুর
১৯৫৮সূর্যতোরণ, স্কুল, ইন্দ্রানী, ডাক্তারবাবু, রাজলক্ষী ও শ্রীকান্ত, যৌতুক, বন্ধু, শিকার
১৯৫৯মরুতীর্থ হিংলাজ, খেলাঘর, গলি থেকে রাজপথ, চাওয়া পাওয়া, বিচারক, সোনার হরিণ, পুষ্পধনু, অবাক পৃথিবী
১৯৬০শুনো বড়নারী, রাজা সাজা, মায়া মৃগ, কুহক, হাত বাড়ালেই, বন্ধু, খোকা বাবুর প্রত্যাবর্তন, সখের চোর, উত্তর মেঘ, শহররে ইতিকথা
১৯৬১সাথীহারা, সপ্তপদী, দুই ভাই, ঝিন্দের বন্দি, অগ্নিসংস্কার, নেকলেস
১৯৬২কান্না, বিপাশা, শিউলিবাড়ি, আমার দেশ
১৯৬৩উত্তরায়ণ, সূর্য শিখা, শেষ অঙ্ক, ভ্রান্তি বিলাস, দেয়া নেয়া, নিশীথে, উত্তর ফাল্গুনী, বিন বাদল বার্সাত
১৯৬৪মোমের আলো, লাল পাথর, জতুগৃহ, বিভাস, নতুন তীর্থ
১৯৬৫সূর্য তাপ, থানা থেকে আসছি, রাজকন্যা, দো দিল
১৯৬৬রাজদ্রোহী, শুধু একটি বছর, নায়ক, কাল তুমি আলেয়া, শঙ্খবেলা
১৯৬৭নায়িকা সংবাদ, চিড়িয়াখানা, ছোটি সি মুলাকাত, এন্টোনি ফিরিঙ্গি, জীবন মৃত্যু, গৃহদাহ
১৯৬৮তিন অধ্যায়, কখনো মেঘ, গড় নাসিমপুর, চৌরঙ্গী
১৯৬৯চিরদিনের, অপরিচিত, কমললতা, সাবরমতি, মন নিয়ে ,শুকসারি
১৯৭০মঞ্জরী অপেরা, কলঙ্কিত নায়ক, নিশি পদ্ম, বিলম্বিত লয়, দুটি মন, রাজ কুমারী
১৯৭১ধন্যি মেয়ে, ছদ্মবেশী, আলো আমার আলো, জয়জয়ন্তী, এখানে পিঞ্জর, জীবন জিজ্ঞাসা, নবরাগ
১৯৭২স্ত্রী, হার মানা হার, মেম সাহেব, অন্ধ অতীত, বিরাজ বৌ, ছিন্নপত্র
১৯৭৩সোনার খাঁচা, কায়াহীনের কাহিনী, বনপলাশীর পদাবলী, রৌদ্র ছায়া, রাতের রজনীগন্ধা
১৯৭৪যদু বংশ, আলোর ঠিকানা, যদি জানতেন, অমানুষ, বিকেলে ভোরের ফুল, রক্ত তিলক, রোদন ভরা বসন্ত
১৯৭৫সন্যাসী রাজা, অগ্নীশ্বর, মৌচাক, কাজল লতা, আমি সে ও সখা, নগর দর্পন, প্রিয় বান্ধবী, বাঘবন্দীর খেলা
১৯৭৬সেই চোখ, বহ্নি শিখা, নিধিরাম সর্দার, হোটেল স্নো ফক্স, আনন্দ মেলা, মোমবাতি, চাঁদের কাছাকাছি
১৯৭৭আনন্দ আশ্রম, কিতাব, সব্যসাচী, রাজবংশ, ভোলা ময়রা, সিস্টার, অসাধারণ, জাল সন্যাসী
১৯৭৮দুই পুরুষ, বন্দী, নিশান, ধনরাজ তামাং
১৯৭৯শ্রীকান্তের উইল, দুরিয়া, দেবদাস, সমাধান, ব্রজবুলি, সুনয়নি, নব দিগন্ত
১৯৮০দুই পৃথিবী, রাজা সাহেব, পঙ্খিরাজ, আরো একজন, রাজনন্দিনী, দর্পচূর্ণ, সূর্য সাক্ষী, প্লট নং-০৫, ওগো বধূ সুন্দরী, কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী, খানা বরাহ, প্রতিশোধ, দেশ প্রেমী, ইমন কল্যাণ

Frequently Asked Questions

Q1: উত্তম কুমারের জন্মদিন কবে ?

ANS: উত্তম কুমারের জন্মদিন ১৯২৬ সালের ০৩ রা সেপ্টেম্বর।

Q2: উত্তম কুমারের আসল নাম কি ?

ANS: উত্তম কুমারের আসল নাম হল অরুণ কুমার চ্যাটার্জী।

Q3: উত্তম কুমারের নাতির নাম কি ?

ANS: উত্তম কুমারের নাতির নাম গৌরব চ্যাটার্জী।

Q4: উত্তম কুমারের মৃত্যুর কারণ কি ?

ANS: উত্তম কুমার হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

Q5: উত্তম কুমারের শিক্ষাগত যোগ্যতা কি ?

ANS: উত্তম কুমার স্নাতকে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শেষ করতে পারেন নি । তাই তিনি আসলে উচ্চমাধ্যমিক পাশ ।

Q6: উত্তম কুমার মহানায়ক উপাধি পান কতো সালে ?

ANS: উত্তম কুমার মহানায়ক উপাধি পান ১৯৭৫ সালের ২৫শে নভেম্বর ।

Q7: উত্তম কুমার কতো বছর বয়সে মারা যান ?

ANS: উত্তম কুমার মাত্র ৫৩ বছর বয়সে মারা যান ।

Q8: উত্তম কুমারের প্রথম অভিনীত সিনেমার নাম কি ?

ANS: উত্তম কুমারের প্রথম অভিনীত সিনেমা ১৯৪৮ সালে নীতিন বোস পরিচালিত ‘দৃষ্টিদান’ ।

Q9: উত্তম কুমার সারাজীবনে কতোগুলি সিনেমাতে অভিনয় করেছেন ?

ANS: উত্তম কুমার সারাজীবনে প্রায় ২৫০টির বেশী সিনেমাতে অভিনয় করেছেন ।

Q10: উত্তম কুমার কবে মারা যান ?

ANS: উত্তম কুমার মারা যান ১৯৮০ সালের ২৪শে জুলাই ।

এই লেখাটি পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ । আশাকরি ভালো লেগেছে । ভালো লাগলে শেয়ার করে বন্ধুদের পাঠিয়ে দেবেন । তারাও আপনার মাধ্যমে লেখাটি পড়তে পারবে ও অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবে । এই ধরনের আরও লেখা পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি সাবক্রাইব করে রাখবেন । লেখার মান কেমন হল কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না । কোনও পরামর্শ বা তথ্য দেওয়ার থাকলে তাও কমেন্টে জানাবেন । ধন্যবাদ ।

হ্যালো বন্ধুরা, আমি কিংশুক দেবনাথ (Kingshuk Debnath), এই সাইটের রূপকার ও প্রতিষ্ঠাতা । পাশাপাশি আমি একজন লেখকও বটে । আমি চাই, নতুন প্রজন্মের সামনে বাঙালী বিখ্যাত ব্যাক্তিত্বের জীবন সংগ্রাম সহ তাঁদের যাবতীয় তথ্য তুলে ধরতে । নতুন প্রজন্ম ঐ সব সফল ব্যাক্তিদের সম্পর্কে জানবে এবং নিজেদের জীবনে একটি লক্ষ্য স্থির করবে । আমি আরও চাই, নতুন প্রজন্ম সহ সমস্ত বাঙালী নিয়মিত আমার সাইটে নজর রাখুক এবং বিখ্যাত ব্যাক্তিদের জীবন সংগ্রাম দেখে নিজেরা উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করুক...

1 thought on “মহানায়ক উত্তম কুমারের জীবন কাহিনী Mahanayak Uttam Kumar Biography in Bengali 2023”

Leave a Comment